কেমন আছেন আপনারা? আশা করি ভাল আছেন।
tech-newsbd.com-এর পক্ষ থেকে আমি খাইরুল ইসলাম (হানজালা).
কেবলমাত্র দু’ একশত বছর নয়, সেই সক্রেটিসের সময় থেকে পৃথিবীর মানুষ আধুনিক সময় পযর্ন্ত অনেক অজানা প্রশ্নের উত্তর খুজে চলছে। তার মধ্যে কিছু প্রশ্ন এমন যে,
১। আমরা কে ?
২। কেন আমরা এখানে ? এবং
বছরে পর বছর চলছে এসব প্রশ্নের উত্তরের সন্ধানে। কালে কালে মানুষের মাস্তিকের বিরর্তন ঘটলেও এসব প্রশ্নের উত্তর যেন কোন পরিবর্তন হচ্ছে না। মানুষ যতই এসব প্রশ্নগুলোর উত্তর খুঁজতে চেয়েছে ততই নতুন নতুন বিষয় সম্পর্কে জানতে পরছে। যা হয়তো তারা এক সময় কল্পনাও করে নাই। আর তারই ধারাবাহিকতায় বেড়ে যাচ্ছে তাদের জানার আগ্রহ। পাল্টে যাচ্ছে তাদের চিন্তর ধরন। এখন চিন্তা করে- ‘এ বিশাল মহাবিশ্বে আমরা কি একা?’ অর্থাৎ এখন প্রশ্ন হচ্ছে এ বিশাল মহাবিশ্বের আমাদের অবস্থান সম্পর্কে নিশ্চিত ধারনায় পৌছাতে ব্যকুল হয়েছে পড়েছি। অস্থিরতা যেন ক্রমশ বেড়েই চলছে।
আমাদের এই সৌরজগতের অন্য ৮-১০ গ্রহের মধ্যে পৃথিবীও একটি। আর আকৃতিগত দিক দিয়ে গ্রহগুলোর মধ্যে কোনো পার্থক্যও পরিলক্ষিত হয় না। শুধু গ্রহই নয় উপগ্রহ, নক্ষত্রগুলোর আকৃতিও একই রকম অর্থাৎ গোল। প্রাথমিকভাবে মানুষ চিন্তা করেছিল, পৃথিবীর যদি একটি ‘গ্রহ’ হয়ে থাকে আর অন্য গ্রহগুলোর আকিৃতিও যদি একই অর্থাৎ গোল হয়, তাহলে নিশ্চয় ঐসব গ্রহেও প্রাণের অস্থিত্ব রয়েছে। হয়তো ওখানেও রয়েছে আমাদের মাতো মানুষ। তাদের দৈনন্দিন ক্রিয়া-কলাপ হয়তো ঠিক আমাদেরই মতো।
কিন্তু বিস্তার গবেষণা এবং পরিক্ষালব্ধ বিভিন্ন পর্যবেক্ষণ প্রমাণিত পৃথিবীতে প্রাণের উৎপত্তি এবং তা টিকে থাকার জন্য যে এখানে পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে (আবহাওয়া, বাতাস, পানি ও মাটির উর্বরতা ইত্যাদির সমন্বয়) তার সঙ্গের অন্য গ্রহের পরিবেশের সাথে কোনো সামঞ্জস্য নেই।
ফলে আমাদের সৌরজগতে পৃথিবীর ছাড়া আর অন্য কোন গ্রহগুলোতে প্রাণের দেখা মেলে নি। তবে অন্যান্য গ্রহে সৌরজগতের বাইরের অবস্থিত গ্রহগুলোতে প্রাণের অস্তিত্বের সম্ভাবনা তারা একেবারেই ছেড়ে দেয়নি। বরং ক্রমশ সেই প্রশ্নের উত্তর খোজা আরো বড় চ্যালেঞ্জের বিষয় হয়ে দাড়িছে।
চিন্তাবিদদের এখন প্রশ্ন হচ্ছে, যদি ঐসব গ্রহের প্রানের অস্তিত্ব থেকেই থাকে তাহলে ওগুলো কেমন হবে? তারা কি আমাদের পৃথিবীর কোন প্রাণির মতোই হবে, নাকি কল্পকাহিনীর মত কোন বিকৃত অবয়বের মতো হবে, যাদের থাকতে পারে জেলিফিস বা অক্টোপাসের মতো দেহ, বড় একটি চোখ এবং হাতির শুড়ের মতো লম্বা হাত। অবশ্যই এ ব্যপারে নিশ্চিত করে কারো পক্ষে কোনো কথা বলা কঠিন। কারণ, একটি গ্রহের প্রাণের আকৃতি বা বৃদ্ধিমত্তা ঐ গ্রহের নিজস্ব প্রকৃতির সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ হওয়াটাই স্বাভাবিক। এটি জানার জন্য ওই প্রাণিগুলোটিকে দেখার আগ পর্যন্ত তার আকৃতি সম্পর্কে ধারণা করা হবে বোকামী। কেবল বোকামী নয়, বড় ভুলও হবে।
পৃথিবীর প্রানিজগৎ বেঁচে আছে অক্সিজেনের উপর নির্ভর করে। তাই বলে অন্যান্য গ্রহের প্রানিদেরও যে অক্সিজেন নির্ভর হতে এমন কোন কথা নেই। তাদের পারমাণবিক গঠনও হতে পারে সম্পূর্ণ ভিন্ন রকমের। এজন্য বিজ্ঞানীরা অক্সিজেনের অস্থিত্ব না থাকা সত্তেও ঐসব গ্রহে (বিশেষ করে মঙ্গলে) প্রানের অনুসন্ধান অব্যাহত রেখেছেন।
আমেরিকার ক্যালেফোর্নিয়া বিশ^বিদ্যালয়ের কর্ণেল ল্যাবরেটরির প্লানেটরি স্ট্যাডিজ বিভাগের অধ্যাপক, বিশিষ্ট জ্যোতিবিজ্ঞানী প্রায়ত কার্ল সাগান বলেছেন- ‘পৃথিবীর মতো প্রাণের বিশাল বিশে^র কোথাও না কোথাও অবশ্যই আছে, এটা আমরা আশা করতে পারি। তিনি তার জীবনের বেশির ভাগ সময় অতিবাহিত করেছেন বহির্জাগতিক প্রাণের অস্তিত্ব প্রমাণের প্রত্যাশায়, এক আন্তঃনাক্ষত্রিক সংস্কৃতির সন্ধানে। তিনি হিসাব কষে দেখেছেন যে, প্রতি ১০০টি প্রযুক্তিসম্পন্ন সভ্যতার মধ্যে একটিও যদি আত্মধ্বংসের অর্থাৎ অজ্ঞতা, লোভ, পরিবেশ দূষণ, নিউক্লিয়ার যুদ্ধের হাতে থেকে বাঁচতে পারে, তাহলে ৪০ হাজার কোটি তারার সমন্বয়ে গঠিত আমাদের এই মিল্কিওয়ে গ্যালাক্সিতে কম করে হলেও এক কোটি গ্রহে প্রযুক্তিগতভাবে উন্নত সভ্যতার বিকাশ ঘটা অসম্ভব কিছু নয়। আর তা সত্যই যুক্তিসঙ্গত।
কার্ল সাগান ৪০০ কোটি বছর আগের প্রাচীন পৃথিবীর পরিবেশ তৈরি হাইড্রোজেন, পানি, অ্যামোনিয়া, মিথেন মিছিয়ে আবিষ্কার করে ছিলেন পৃথিবীতের প্রাণের আদি মৌলিক সব উপাদান এ ছাড়াও মঙ্গলগ্রহের পরিবেশ তৈরি করে এ স্থানে আদৌ প্রাণের উৎপত্তি সম্ভব কিনা। তা জানাও চেষ্টা করছেন। এ থেকে তিনি জানতে পেরেছেন, আণবিক পর্যায়ের কার্বন ভিত্তিক প্রানের পক্ষে মঙ্গলগ্রহের পরিবেশে টিকে থাকা সম্ভব। যদিও মঙ্গলে পাঠানো পাথফাইন্ডার এবং পরবর্তী মহাকাশ অভিযানগুলো হতে সরাসরি প্রানের অস্তিত্বের কোনো প্রমাণ পাওয়া যায় নি। আমাদের এই মিল্কিওয়ে গ্যালাক্সিতে প্রায় ১ লাখ ৩০ হাজার কোটি গ্রহ আছে এবং বর্তমান কালের অনুসন্ধানে বিভিন্ন নক্ষত্র গ্রহরেু আবিষ্কার কার্ল সাগানের ধারণাকেই সমর্থন দিচ্ছে। তিনি বলেছেন, ‘শুধু প্রাণের অস্তিত্বই নয়, বুদ্ধিমান প্রানি বিকাশের মতো মহাজাগতিক নাটকের এ এক বিশাল হিসাব। সে আশায় ১৯৭৪ সালে তিনি এবং ফ্লাঙ্ক ড্রেক পৃথিবী থেকে ২৬ আলোকবর্ষ দূরে অবস্থিত হারকিউলিসের ‘M-13’ নক্ষত্রপুঞ্জের উদ্দেশে এক বেতার বর্তা পাঠিয়েছেন। যদি কোন বুদ্ধিমান প্রাণি এ বেতার সংকেতটি পেয়ে থাকে, তাহলে অবশ্যই তারা পৃথিবী সম্পর্কে আগ্রহী হবে এবং যোগাযোগের চেষ্টা করবে।
ভবিষ্যত প্রজন্ম তার জন্য অবশ্যই অপেক্ষা করবে।
[বন্ধুরা, পোস্টটি কেমন হলো কমেন্টস করে জানাবেন। আপনি যদি টেকনোলজি বিষয়ে কিছু জানতে চান অথবা আমাদের পোস্টে যদি কোন প্রকার ভুল ত্রুটি থাকে তাহলে ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন এবং অবশ্যই কমেন্টস বক্সে “ভূল তথ্যটি উল্লেখ করবেন” ইনশাল্লাহ খুব দ্রুতই সেটা সমাধান করা হবে। আপনার একটি কমেন্টস আমাদেরকে আরো ভালো কিছু লিখার অনুপ্রেরণা জাগাবে। বিশ্বের সকল প্রকার অজানা ও রহস্যময় তথ্য সম্পর্কে জানতে প্রতিনিয়ত আমাদের সাইটে ভিজিট করুন এবং আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিন।]
Post A Comment:
0 comments: