কিভাবে বিজ্ঞানের জন্ম হল বা বিজ্ঞানের ইতিকথা কি ? বিজ্ঞান জন্মের ইতিহাস, বিজ্ঞানের জন্ম কথা, বিজ্ঞানের কাহীনি, বিজ্ঞানের ইতিহাস, বিজ্ঞানের প্রকৃতি ও ইতিহাস, ইতিহাস ও বিজ্ঞান, বিজ্ঞান কি? বিজ্ঞান কাকে বলে ? আধুনিক বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি,

আসছালামু আলাইকুম, বন্ধুরা.
কেমন আছেন আপনারা? আশা করি ভাল আছেন।
tech-newsbd.com-এর পক্ষ থেকে আমি খাইরুল ইসলাম (হানজালা).

বিজ্ঞানের ইতিকথা সম্পর্কে জানতে হলে প্রথমে আমাদের জানতে হবে “বিজ্ঞান আসলে কি?” অথবা “বিজ্ঞান কাকে বলে?”.

এক কথা বিজ্ঞান হলো কোন বিষয় সম্পর্কে সুসঙ্গত জ্ঞান। মানুষ যখন কোন বিষয় জানার আগ্রহ নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে, এবং বিভিন্ন ধাপ অতিক্রম করে ঐ বিষয়ের বিশেষ কিছু তথ্য সম্পর্কে অবগত হয় তাকেই বিজ্ঞান বলে। অর্থাৎ বিজ্ঞান হলো অজানা কোন বিষয়ের সম্পর্কে জানার যে প্রক্রিয়া বা জ্ঞান তাকে বিজ্ঞান বলে। 

বিজ্ঞানের ইতিকথা বা ইতিহাস

বিজ্ঞানের শুরুটা প্রাচীন সভ্যতার মতোই পুরোনো। বিজ্ঞান জন্মের পেছনে প্রথম যে বিষয়টি পরিলক্ষিত হয় তাহলো অজানার প্রতি জানার আগ্রহ বা প্রয়োজন। একটা প্রবাদ আছে যে প্রয়োজনই উদ্ভাবনে জনক। একটা সয়ম ছিল মানুষের জীবনযাপন ও চিন্তাধারা ছিল নির্দিষ্ট গন্ডির ভিতর। অর্থাৎ মানুষের চাহিদাটাও ছিল খুবই সিমীত। কিন্তু ধীরে ধীরে যখন মানুষের চাহিদা বৃদ্ধি পেতে থাকল এবং অজানার প্রতি জানার আগ্রহ জন্ম নিতে থাকল প্রকৃত বিজ্ঞানের জন্মটা ঠিক তখন থেকেই। মানবজাতির সেই চেষ্টার ধারাবাহিকতাতেই ধীরে ধীরে আমরা আজকের বিজ্ঞানসম্মত চিন্তাগুলোতে উপনীত হয়েছি। প্রাচীন কালে বিজ্ঞান জন্মানোর ধারাপৃবাহের প্রথম যে ধাপটি লক্ষণীয় বলে ধরা হয় তা ছিল পূরাণ বা Myth.

 প্রাচীনকাল থেকেই মানুষের মুখে মুখে বিভিন্ন কথা, গল্প, কাহীনির উপাথ্যান তৈরি হয়েছে। যা পরবর্তীতে এ ওকে বলে গেছে, সে বলেছে তার পরের প্রজন্মকে। আর এভাবে প্রত্যেক প্রজন্মে গল্পগুলো একটু একটু করে পাল্টে গেছে, ফলে সেই সাধারণ মানুষের বীরত্বের গল্প-কাহীনিগুলো হয়ে গেছে দেবতাসূলভ এবং সেইগুলোই কিংবদন্তীর রূপ নিয়ে লিপিবদ্ধ হয় পুরাণে। 

একটি ইংলিশ মুভি রয়েছে যার নাম Lord of the rings: Fellowship of the ring. এই মুভির শুরুর দিকে একটা সংলাপ এমন ছিলো যে,- History became legend, legend became myth.(অর্থাৎ পুরোনো ইতিহাসই হয়ে উঠে কিংবদন্তী, আর কিংবদন্তী ঘটনাগুলোই হয়ে গেছে পুরাণ)। লেখক রাহুল সাংকৃত্যায়নের “ভোলগা থেকে গঙ্গা” নামক বইটিতে খুব চমৎকারভাবে পুরাণ তৈরি হওয়ার একটা ধারাপ্রবাহ তুলে ধরা হয়েছে। পাঠকদের মধ্যে যদি কেই বিজ্ঞানের নিদর্শন ও পুরাণের ইতি কথা সম্পর্কে জানতে আগ্রহী হন তাহলে এই বইটা পড়ে নিতে পারেন। 

সে যাই হোক, এসব মিথ বা পুরাণ তৈরি হওয়ার পেছনে প্রাকৃতিক ঘটনাগুলো ব্যাখ্যা করাই ছিল সবথেকে মূল উদ্দেশ্য। প্রকৃতিতে সর্বদায় অনেক ঘটনা ঘটে চলছে অতীত কাল থেকে। যেমন- আকাশ থেকে বৃষ্টি পড়ছে, হঠাৎ হঠাৎ পুরো আকাশ আলোকিত হচ্ছে, মাটিতে বীজ পড়লে সেখান থেকে গাছ যেন দাড়িয়ে পড়ছে, দিনের বেলা চাঁদ ডুবে গেছে, রাতের বেলা সূর্য কোথায় যেন হারিয়ে যাচ্ছে ইত্যাদি আরো বিভিন্ন কৌতুহলী প্রশ্ন। এগুলো দেখে মানুষ বরাবরই অবাক হয়েছে। যদিও আমাদের সেই পূর্বপুরুষদের কাছে অতীতের কোনো ইতিহাস লিপিবদ্ধ করে রাখা ছিলোনা। তাছাড়া তাদের কাছে এমন কোন প্রাকার যন্ত্রপাতি বা বিশেষ কৌতুহলী জ্ঞানও ছিলনা যে, তারা সেটার সঠিক কারণ পরিক্ষা বা পর্যাবেক্ষণ করবে। তারা কম পরিশ্রমে বা কম সময়ে যে ব্যাখ্যাটা দাঁড় করাতে পেরেছিলো, সেটাকেই তারা সাদরে গ্রহণ করেছিলো। সবথেকে বড় কথা হলো সেই সময় এর থেকে ভিন্ন কোন তথ্য গ্রহণ করার মত বিকল্পও ছিল না। তাদের একমাত্র ব্যাখ্যাটাই ছিলো, রহস্যময় এক সত্তার প্রভাব-এমন এক সত্তা যার ক্ষমতা আছে সূর্যকে রাতের বেলা লুকিয়ে ফেলার, মাঠি থেকে গাছ জন্ম দেয়ার বা চাঁদকে একেক সময়ে একেক আকৃতি দেয়ার। আসলে ধর্ম মতে- এ ভাবনাগুলো ছিল সম্পূর্ণ সত্য। কারণ সৃষ্টিকর্তার (আল্লাহর) ইশারা ছাড়া এগুলো কখনই ঘঠা সম্ভব না। তবে, ধর্ম বিবেচনার দিক থেকে তারা সৃষ্টিকতাকে ভাগ করে ফেলে। যা ছিল অবান্তর বিষয়। ফলে তারা প্রকৃতিক ঘঠনাগুলোকে ভিন্ন ভিন্ন ¯্রষ্টা মানা শুরু করে। যেমন- উর্বরতার দেবী ফ্রেইয়া এবং বজ্রপাতের দেবতা থর। একই রকম দেব-দেবী গ্রীক (Demeter and Zeus), মিশরীয় (Amun or Isis, and Seth), রোমান (Fecunditus or Venus, and Jupiter), বা উপমহাদেশীয় (অদিতি/ভূমি আর ইন্দ্র) পূরাণেও পাওয়া যাবে।   

এখান থেকে প্রাচীন কাহিনীগুলো দু ভাগ হয়ে গেলো। তখন মানুষরা এই ধারণাগুলোকে আঁকড়ে ধরার মাধ্যমে তৈরি হলো এক ভিন্ন ধর্ম। আর প্রাচীন গ্রীসের কয়েকজনের মনে হলো, এই সব ঘটনা বা ধারণাগুলোর কোনো ভিত্তি নেই। তারা বললেন, সবকিছুকে নতুন করে চিন্তা করতে হবে। ফলে এই পুরাণকে ভেঙ্গে ফেলার মাধ্যমেই জন্ম নিলো দর্শন এর। 

এরিস্টটলের মতে, খ্রিষ্টপূর্ব ৬০০ অব্দের দিকে পৃথিীবীর বুকে পদাচারণা করে যাওয়া থেলিস হলেন পথম দার্শনিক। তবে একজনের আর্বিভাবের আগে পুরো বিষয়টিই যেন যাপসা ছিলো। তিনি এসে এটাকে একটা শক্ত ভিত্তি দিলেন। আর এজন্য এখানো অনেকে তাকেই প্রথম দার্শনিক বা ফিলোসফার বলে অভিহিত করেন- তার নাম সক্রেটিস। বাস্তবিক অর্থে তার ধারনাগুলো প্রকাশ করা খুব সহজ ছিলো না। আর সেজন্যেই হয়তো সক্রেটিসের নাম ইতিহাসে রয়ে গেছে। প্রকৃত পক্ষে তখন তিনি একটা আগুন জ¦ালিয়ে দিয়েছেলেন, যেটা আজো জ¦লছে। যেটা ছিল র্ধম আর দর্শন, দুটোই প্রকৃতিকে ব্যাখ্যা করতে চাওয়া।  

ধর্ম যেখানে গুরুত্ব আরোপ করেছে নিজেকে সংঘবদ্ধ রূপ দান করতে, পুরাতন ব্যাখ্যাগুলোকে আঁকড়ে ধরতে; দর্শন চেয়েছে কোথাও ভুল হচ্ছে কিনা, সেটাকে চিহ্নিত করতে। স্বভাবিকভাবেই ধর্ম মানুষের কাছে পৌঁছে গেলো খুব দ্রুত। আর দর্শন রয়ে গেলো কেবল ছিদ্রান্বেষীদের হাতে, অবশ্য এর গতি কমলো না। কারণ, দর্শনের ঝান্ডা হাতে নিয়েছিলেন ইতিহাসের সবচেয়ে বিখ্যাত ব্যক্তিরা, যেমন- সক্রেটিসের শিষ্য প্লেটো, এবং প্লেটোর শিষ্য এরিস্টটল, এমন আরো অনেকে। ধর্ম পুরনো গল্পগুলোকে নতুন রূরে উপস্থাপন করলো, আর Philosophy (Phil + Sophie = Love + Wisdom) নিজেকে যুক্ত করলো জ্ঞানের ভালোবাসায় নুতন জ্ঞান তৈরির কাজে। আর এভাবেই জন্ম নিল বিজ্ঞানের। 

পরবর্তীতে বিজ্ঞান চিন্তাভাবনা করে হাইপোথিসিস দাঁড় করানোটা ক্ষেত্রে মূল ধারণা ধার করলো দর্শনের কাছ থেকে, কিন্তু নিজেদের মনোনিবেশ করলো সেই হাইপোথিসিসগুলোকে যুক্তি তত্ত্বে দ্বারা প্রমাণ করতে এবং থিওরিতে রূপান্তরিত করতে। আর এই প্রমাণ্য প্রায়স থেকেই পাল্টে যেতে শুরু করল আমাদের চারপাশের সব কিছুই। বিজ্ঞান বলে- “ আমরা এখানো তেমন কিছুই জানি না এবং সেগুলো নিয়ে গবেষণা করাই আমাদের প্রধান দায়িত্ব”। 

সূত্র- গুগল

বন্ধুরা, এটাই ছিল বিজ্ঞান জয় যাত্রার সংক্ষিপ্ত ইতিহাস। পোস্টটি পড়ে যদি কিছুটা হলেও বিজ্ঞানের জয় যাত্রা সম্পর্কে ধারণা করতে পারেন তবেই আমার সার্থকতা।   

[বন্ধুরা, পোস্টটি কেমন হলো কমেন্টস করে জানাবেন। আপনি যদি টেকনোলজি বিষয়ে কিছু জানতে চান অথবা আমাদের পোস্টে যদি কোন প্রকার ভুল ত্রুটি থাকে তাহলে ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন এবং অবশ্যই কমেন্টস বক্সে “ভূল তথ্যটি উল্লেখ করবেন” ইনশাল্লাহ খুব দ্রুতই সেটা সমাধান করা হবে। আপনার একটি কমেন্টস আমাদেরকে আরো ভালো কিছু লিখার অনুপ্রেরণা জাগাবে। বিশ্বের সকল প্রকার অজানা ও রহস্যময় তথ্য সম্পর্কে জানতে প্রতিনিয়ত আমাদের সাইটে ভিজিট করুন এবং আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিন।]

ওয়েব সাইট লিংকTechnewsbd.com
ফেসবুক পেইজ লিংকOjana Totto BD


Axact

Axact

Vestibulum bibendum felis sit amet dolor auctor molestie. In dignissim eget nibh id dapibus. Fusce et suscipit orci. Aliquam sit amet urna lorem. Duis eu imperdiet nunc, non imperdiet libero.

Post A Comment:

0 comments: