আসছালামু আলাইকুম,
বন্ধুরা.
কেমন আছেন
আপনারা? আশা করি ভাল আছেন।
tech-newsbd.com-এর পক্ষ থেকে আমি খাইরুল ইসলাম (হানজালা).
বর্তমান যুগ তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির যুগ। বর্তমানে যে জাতি যত বেশি তথ্য বহুল সে জাতি তত বেশি উন্নত। আর এই তথ্য ও প্রযুক্তির বিপুল পরিবর্তন সাধিত হয়েছে কেবল মাত্র কম্পিউটার আবিষ্কারের পর থেকেই।
কম্পিউটার বর্তমানে এমন একটি প্রয়োজনীয় ডিভাইস হয়ে দাড়িয়েছে। যা কম্পিউটার আবিষ্কারকরাও কল্পনা করতে পারেনি। আমরা জানি কম্পিউটার একটি গণনাকারী যন্ত্র। কম্পিউটার আবিষ্কারের প্রধান উদ্দেশ্যই ছিল গণনা বা গাণিতিক কাজকে সহজ করা। কিন্তু বর্তমানে আমাদের চার পাশে একটু ভাল করে লক্ষ করলে এর ব্যাপক ব্যবহার পরিলক্ষিত করতে পারি। গণনা, শিক্ষা, চিকিৎসা, ব্যবসায়, বিনোদন এমনকি মহাকাশ গবেষণার কাজেও কম্পিউটারের দেখা যায়।
আসলে আমাদের দেশ যদিও মধ্য আয়ের দেশ তারপরও আমাদের দেশে কম্পিউটারের ব্যাপক ব্যবহার হচ্ছে। দিন দিন এর ব্যবহার বেড়েই চলছে। এমন একটি সময় আসবে প্রতিটি বাড়িতে বাড়িতে একটি করে কম্পিউটার থাকবে। অর্থাৎ যার হাতে একটি মোবাইল ফোন আছে তার বাড়িতে একটি কম্পিউটারও থাকবে। এ কথা সঠিক যে, সারাবিশে^ কম্পিউটারের ব্যবহার বাড়ছে এবং ক্রমাগত বেড়েই চলবে।
কম্পিউটারের ব্যবহার সম্পর্কে আমরা দিনের পর দিন নতুন, নতুন ব্যবহারবিধি জানছি। কিন্তু একই কম্পিউটার কিভাবে আবিষ্কার হলো তা সম্পর্কে আমরা কতটুকু জানি ?
বন্ধুরা, এই পশ্নের উত্তর খুজতেই বা কম্পিউটার আবিষ্কারের সম্পূর্ণ ইতিহাস সম্পর্কে জানাই হলো আমাদের আজকের পর্ব।
কম্পিউটারের ইতিহাস জানার আগে চলুন কম্পিউটার কাকে বলে এই সম্বন্ধে সংক্ষেপে জেনে নেই, Computer-শব্দটি এসেছে গ্রিক শব্দ Compute থেকে এসেছে। যার অর্থ আমরা আগেই বলেছি, গণনা করা। কম্পিউটারের কাজের গতি হিসাব করা হয় ন্যানো সেকেন্ড। ন্যানো সেকেন্ড হলো ১ সেকেন্ডের ১০০ কোটি ভাগে এক ভাগ।
বন্ধুরা, বক বক অনেক হয়েছে। চলুন কম্পিউটারের আবিষ্কার সম্পর্কে জেনে নেয়া যাক।
ইতিহাস ঘেটে যতটুকু জানা যায়, প্রায় চার হাজার বছর পূর্বে চীনাদের তৈরি অ্যাবাকাস নামক গণনাকারী যন্ত্রটিই প্রথম ছিল প্রথম গণনাকারী যন্ত্র। যাকে কম্পিউটারের পূর্ব পুরুষ বলা হয়। তখন থেকে আজ অবধি অনেক পর্যায় অতিক্রম করে বর্তমান আধুনিক কম্পিউটার আমাদের সামনে উপস্থিত হয়েছে। আধুনিক কম্পিউটারের রূপরেখা তৈরি করেন ব্রিটিশ গণিত বিশারদ চালর্স ব্যাবেজ (Charles Babbage)। ১৮৩৩ সালে তিনি প্রাচীন প্রজন্মের সব যন্ত্রগণকের জন্য স্মৃতিভান্ডারের প্রয়োজনীয়তা উপলব্ধি করে “অ্যানালিটিকেল” নামক একটি যন্ত্র তৈরির পরিকল্পনা করেন। বিভিন্ন কারণে তার এ প্রচেষ্টা বাস্তব রূপদানে সমর্থ না হলেও তার এ পরিকল্পনার উপর ভিত্তি করেই আজকের আধুনিক কম্পিউটার আবিষ্কৃত হয়েছে। এ কারণে চালর্স ব্যাবেজকে কম্পিউটারের আদি পিতা বা কম্পিউটারের জনক বলা হয়ে থাকে।
১৮৮৭ সালে ড. হারম্যান হলেরিথ যুক্তরাষ্ট্রের আদমশুমারি কাজে ব্যবহারের জন্য ইলেকট্রো মেকানিক্যাল ব্যবস্থায় পাঞ্চকার্ডের সমন্বয় ঘটিয়ে একটি তথ্য প্রক্রিয়াকরণের যন্ত্র আবিষ্কার করেন। এ যন্ত্রের সাহায্যে দ্রুত আদমশুমারির রিপোর্ট তৈরি করা সম্ভব হয়েছিল।
১৮৯৬ সালে হলেরিথ এ যন্ত্র তৈরির জন্য ‘হলেরিথ টেবুলিটিং মেশিন কোম্পানি’ নাম দিয়ে একটি কোম্পানি প্রতিষ্ঠা করেন। পরবর্তীতে এ জাতীয় আরো কয়েকটি কোম্পানি মিলে বিখ্যাত কম্পিউটার প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান ‘ইন্টারন্যাশনাল বিজনেস মেশিন কর্পোরেশ’ সংক্ষেপে IBM-এর জন্ম হয়।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের গণিতের অধ্যাপক হাওয়ার্ড এইচ. আইকেন IBM-এর চারজন প্রকৌশলীর সহযোগিতায় ১৯৪৪ সালে Mark-1 নামে প্রথম স্বয়ংক্রিয় সাধারণ ইলেকট্রোমেকানিক্যাল ডিজিটাল কম্পিউটার তৈরি করেন।
১৯৪৬ সালে যুক্তরাষ্ট্রের পেনসিলভানিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড.জন মউসলি এবং তাঁর এক ছাত্র প্রেসপার একার্ট EINAC নামে তৈরি করেন প্রথম প্রজন্মের ডিজিটাল কম্পিউটার।
১৯৪৬ সালে হাঙ্গেরীয় গণিতবিদ জন ভন নিউম্যান ‘সংরক্ষিত প্রোগ্রাম’ (Internal Stored Program) ধারণাটি উদ্ভাবন করেন। তিনিই প্রথম কম্পিউটারের ‘তথ্য ও নির্দেশ’ সংরক্ষিত রাখার ব্যবস্থা করেন।
এরপর জন মউসলি ও প্রেসপার একার্ট নিজেদের কোম্পানিতে ১৯৫১ সালের মার্চ মাসে ইউনিভ্যাক-১ (UNIVAC = Universal Automatic Claculator) তৈরি করেন। এটিই সর্বপ্রথম বাণিজ্যিকভিত্তিতে তৈরি ইলেকট্রনিক কম্পিউটার।
১৯৪৮ সালে ট্রানজিস্টর (Transistor) আবিষ্কৃত হওয়ার পর কম্পিউটারে ভালবের বদলে ট্রানজিস্টরের ব্যবহার শুরু হয়। ট্রানজিস্টর ব্যবহৃত কম্পিউটরগুলো আকারে ছোট হয়ে যেতে শুরু করে। কম্পিউটারগুলো আগের কম্পিউটার অপেক্ষায় উন্নত ছিল।
ট্রানজিস্টরের পর আসে আইসি (IC) এর ব্যবহার। সিলিকন বা সেমিকন্ডাক্টর-এর একটি ক্ষুদ্র অংশে একাধিক ট্রানজিস্টর সন্নিবেশিত করা হলে তাকে বলা হয় আইসি বা সমন্বিত সার্কিট। আইসি ব্যবহার করে তৈরি হলো নতুন প্রজন্মের কম্পিউটার।
কম্পিউটারের সবচেয়ে বড় বিপ্লব ঘটে মাইক্রোপ্রসেসর আবিষ্কারের মধ্যে দিয়ে। ১৯৭১ সালে আমেরিকার ইন্টেল (Intel) নামক কোম্পানি সর্বপ্রথম মাইক্রোপ্রসেসর (Microprocessor) তৈরি করে। ফলে কম্পিউটারের দাম কমতে শরু করে এবং ব্যবহারের সুবিধা ও কাজের ক্ষমতা হাজার হাজার গুনে বেড়ে যায়। মাইক্রোপ্রসেসর দিয়ে তৈরি কম্পিউটারকেই আধুনিক মাইক্রোকম্পিউটার বা পার্সোনাল কম্পিউটার বলা হয়।
[বন্ধুরা, পোস্টটি কেমন হলো কমেন্টস করে জানাবেন। আপনি
যদি টেকনোলজি বিষয়ে কিছু জানতে চান অথবা আমাদের পোস্টে যদি কোন প্রকার ভুল ত্রুটি থাকে
তাহলে ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন এবং অবশ্যই কমেন্টস বক্সে “ভূল তথ্যটি উল্লেখ
করবেন” ইনশাল্লাহ খুব দ্রুতই সেটা সমাধান করা হবে। আপনার একটি কমেন্টস আমাদেরকে
আরো ভালো কিছু লিখার অনুপ্রেরণা জাগাবে। বিশ্বের সকল প্রকার অজানা ও রহস্যময় তথ্য
সম্পর্কে জানতে প্রতিনিয়ত আমাদের সাইটে ভিজিট করুন এবং আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক
দিন।]
Post A Comment:
0 comments: