আসছালামু আলাইকুম, বন্ধুরা.
কেমন আছেন আপনারা? আশা করি ভাল আছেন।
tech-newsbd.com-এর পক্ষ থেকে আমি খাইরুল ইসলাম (হানজালা).
স্থানটির নাম সেংগসান। এটি চিনের পূর্ব সাংহাইয়ের পাহাড়ে ঘেরা একটি পাথুরে দ্বীপের মধ্যে অবস্থিত। পরিত্যক্ত এই দ্বিপটি চিনের মূল ভূখন্ড থেকে বিচ্ছিন্ন দ্বীপ বা গ্রামটির আর একটি নাম হলো “হাউটুয়া ওন”। প্রায় ৫০ বছর ধরে পরিত্যক্ত হয়ে পরে আছে এই গ্রামটি। যার ফলে গ্রামটি এখন সবুজের গ্রাসে বিলীন প্রায়। চারপাশে তাকালে যেন মনে হয় একটি সবুজ বাগান। গাছপালায় ছেয়ে গেছে সবদিক তাই সবুজ আর সবুজের সমারোহ ছড়িয়ে পড়েছে এই গ্রামটিতে। এমনকি রাস্তাঘাটসহ সকল বাড়িঘর ঢেকে যাচ্ছে গাছের অন্তরালে।
তথ্য মতে, আজ থেকে প্রায় ৫০-৫৫ বছর পূর্বে প্রায় ২হাজারেরও বেশি মানুষ এই গ্রামে বাস করত। কিন্তু তারা হঠাৎ করে গ্রামটি ছেড়ে শহরে আশ্রয় নেয়। তার পর থেকেই গ্রামটি পরিত্যক্ত হয়ে পরে। ফলে জনমানব হীন এই গ্রামটিকে গ্রাস করতে থাকে প্রকৃতি।
মাত্র কয়েকবছর আগে এই গ্রামের সন্ধান পাওয়া যায়। কয়েকজন পর্যটক বেড়াতে গিয়ে পথ ভুলে এই গ্রামটিতে উপস্থিত হয়। মূলত প্রায় ৫০-৫৫বছর পর তারাই আবার নতুন করে আবিষ্কার করে গ্রামটিকে। তাদের তোলা ছবি ও গ্রামের বর্ণনা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতে ছড়িয়ে পরে দ্রুত। আর তারপর থেকেই এই গ্রামের সৌন্দর্য দেখতে দলে দলে মানুষ ছুটে যায়।
ধারনা মতে, এই সন্দুর গ্রামটি পাহাড় কেটেই তৈরি করা হয়েছিলো। এমনকি গ্রামের ছোট ছোট ঘরগুলোও তৈরি করা হয়েছে পাড়ার কেটেই। এ ছাড়া পাহাড়ি এই গ্রামের এক বাড়ি থেকে অন্য বাড়ি যাতায়তের জন্য সুন্দর করে পাহাড় কেটে রাস্তাও তৈরি করা হয়েছিলো। যা এখনো রয়েছে সেসব রাস্তা।
এই গ্রামের প্রকৃতি এতটাই মনোরম যে, এই গ্রামে গেলে আপনিও মুগ্ধ হয়ে যাবেন। চারপাশে তাকেলে মনে হবে যেন প্রকৃতি তার দুই হাত ছড়িয়ে নিজেকে মেলে ধরেছে এখানে। ঘর বাড়ি থেকে শুরু করে টয়লেট, উঠান, রাস্তঘাট, বাড়ির দেয়াল সবকিছুই যেন ডুবে রয়েছে সবুজের মায়াতে। দেখলে মনে হয় যেন কেউ শখের বসে সুন্দর করে এসব সৃষ্টি করেছে। যদিও বাস্তবতাটা তা নায়। দীর্ঘদিন যাবত পরিত্যাক্ত থাকার কারণে প্রাকৃতিকভাবেই এই অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে।
এটি মূলত শহর থেকে অনেক দূরে অবস্থিত। জলপথে ‘সাংহাই’ থেকে গ্রামতিতে যেতে হলে সময় লাগে প্রায় পাঁচ ঘন্টা। গ্রামটির আয়তন প্রায় ৫০০ বর্গকিলোমিটার। এখানে যারা ছিল তারা সবাই ছিল জেলে পরিবাবের সদস্য। যারা সবাই একসময় এই গ্রাম চেড়ে চলে যায়। তবে সবাই চলে যায় নি। মায়ার টানে এখনো প্রায় ১০জন গ্রামবাসি রয়ে যায়। এখনও তারা বসবাস করে চলছে সেখানে। তাদেরই মধ্যে একজানে নাম হলো ‘সান আয়ো’। ইয়াংটিজ নদীর পাশের এই সুন্দর গ্রামটি ছেড়ে কেনো সবাই হঠাৎ চলে গিয়ে ছিল তার সঠিক তথ্য জানা যায় ‘সান আয়ো’ এর কাছ থেকে।
তিনি জানান, তাদের গ্রামটি শহর থেকে অনেক দূরে হওয়ায় শহরের সকল সুবিধা থেকে তারা ছিল বঞ্চিত। এজন্য শহুরে জীবনের তাগিদে, ছেলে-মেয়েদের লেখাপড়া শেখানো ও অন্যান্য নাগরিক সুবিধার কারণে আস্তে আস্তে সবাই গ্রাম ছেড়ে শহরের দিকে পাড়ি জমায়।
তবে মজার
বিষয় হলো,
শীতের সময় এখনো এই গ্রামের অনেকেই ফিরে আসে। প্রায় ১০ হাজার জেলে মাছ শিকার করতে চলে আসে এই গ্রামে। কারণ শীতকালে এখানে গড় তাপমাত্রা থাকে প্রায় ১৫.৮ সেলসিয়াস। তবে জেলেরা মাছ ধরতে ফিরে আসলেও তারা আর এখানে বসবাস করতে চায় না। মাছ ধরা শেষে আবার একে একে সবাই চলে যায় শহরের দিকে।
পরিত্যক্ত এই গ্রামের প্রতিটি বাড়ির দেয়াল ঢেকে গেছে নানা লতাপাতায়। লতাপাতা জড়িয়ে এক নান্দনিক সবুজের সমারোহের সৃষ্টি করেছে চারপাশে। এর সৌন্দর্য যে কাউকেই সহজে কাছে টানে আনতে পারে। এই গ্রামে যেসব পর্যটক আসেন তাদেরকে গ্রাম ঘুরিয়ে দেখানো দায়িত্বটা
পালন করে থাকেন সান আয়ো। তিনি বলেন, এ কাজে তিনি খুব মজা পান ।
গ্রামের ঢুকলে মনে হয় সময় যেনো সেখানে থেমে আছে। আর আছে প্রকৃতির দুহাত বাড়িয়ে থাকা হাতছানি। ছোটো ছোটো সবুজ লতায় আবৃত হয়ে থাকা সব ঘরবাড়ি। আঙ্গুরের লতার মতো ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র শাখাগুলো পরিত্যক্ত বাড়িগুলোকে জড়িয়ে রেখে সৌন্দর্য আরও বাড়িয়ে তুলেছে।
বর্তমানে
সামাজিক
যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতে এ গ্রামটি নিয়ে বেশ কিছু ছবি ও ভিডিও ছড়িয়ে পরেছে। প্রায় প্রতিদিনই দূর দুরান্ত থেকে মানুষ এই গ্রামে ছুটে আসছে। আপনার যদি কখনো চীনে যাওয়ার সুযোগ হয় তাহলে এই গ্রামে একবার ঘুরে আসতে ভুলবেন না!
[বন্ধুরা, পোস্টটি কেমন হলো কমেন্টস করে জানাবেন। আপনি যদি টেকনোলজি বিষয়ে কিছু জানতে চান অথবা আমাদের পোস্টে যদি কোন প্রকার ভুল ত্রুটি থাকে তাহলে ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন এবং অবশ্যই কমেন্টস বক্সে “ভূল তথ্যটি উল্লেখ করবেন” ইনশাল্লাহ খুব দ্রুতই সেটা সমাধান করা হবে। আপনার একটি কমেন্টস আমাদেরকে আরো ভালো কিছু লিখার অনুপ্রেরণা জাগাবে। বিশ্বের সকল প্রকার অজানা ও রহস্যময় তথ্য সম্পর্কে জানতে প্রতিনিয়ত আমাদের সাইটে ভিজিট করুন এবং আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিন।]
Post A Comment:
0 comments: